বাংলাদেশে Samsung Galaxy A36 এর দাম (Price In BD)

বাংলাদেশে Samsung Galaxy A36 স্মার্টফোনটি বাজারে আসার পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।

Samsung-Galaxy-A36

পোস্ট সুচিপত্রঃআর মুলত কারণ বাজেটের মধ্যে প্রিমিয়াম ডিজাইন, শক্তিশালী ফিচার, দীর্ঘমেয়াদি সফটওয়্যার সাপোর্ট আর নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ড স্ট্রেংথ। এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব “Samsung Galaxy A36 বাংলাদেশে দাম (price in BD)”, স্পেসিফিকেশন, পারফরম্যান্স, ফটো & ভিডিও ক্যাপচার ক্ষমতা, ব্যাটারি ও চার্জিং, সফটওয়্যার, কানেক্টিভিটি, এগুলো কেন বিশ্বাসযোগ্য পছন্দ—সবকিছুই।

ভূমিকা

বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন বাজারে স্যামসাং একটি অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে তাদের গ্যালাক্সি এ সিরিজ বাংলাদেশের বাজারে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এই সিরিজের নতুন সংযোজন Samsung Galaxy A36 বাংলাদেশের বাজারে আসার পর থেকেই ব্যাপক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা Samsung Galaxy A36 এর সকল বৈশিষ্ট্য, স্পেসিফিকেশন এবং বাংলাদেশে এর দাম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

Samsung Galaxy A36 - সম্পূর্ণ তথ্য

Samsung Galaxy A36 - সম্পূর্ণ বিশেষত্ব ও মূল্য

বিশেষত্ব বিস্তারিত তথ্য
ব্র্যান্ড Samsung
মডেল Galaxy A36 5G
RAM 6GB / 8GB / 12GB LPDDR4X
মাল্টিটাস্কিং
গেমিং অপ্টিমাইজড
Storage (ROM) 128GB / 256GB UFS 2.2
Main Camera 50MP প্রধান 8MP আল্ট্রাওয়াইড 5MP ম্যাক্রো
OIS + AI ফটোগ্রাফি সহ
Front Camera 12MP সেলফি ক্যামেরা
Battery 5000mAh Li-ion + 45W দ্রুত চার্জিং
ডিভাইস টাইপ 5G স্মার্টফোন
Display 6.7" Super AMOLED
প্রকাশের তারিখ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশ মূল্য ৩৯,৯৯৯ - ৪০,৯৯৯ টাকা
অপারেটিং সিস্টেম Android 15, One UI 7
CPU Qualcomm Snapdragon 6 Gen 3
ইউজার ইন্টারফেস Samsung One UI 7
ফেব্রিকেশন 4nm প্রক্রিয়া
চিপসেট Qualcomm Snapdragon 6 Gen 3
আর্কিটেকচার 64-bit
GPU Adreno 710
CPU কোর অক্টা-কোর (2×2.4 GHz Cortex-A78 + 6×1.8 GHz Cortex-A55)
ডিসপ্লের আকার 6.7 ইঞ্চি
ডিসপ্লে টাইপ Super AMOLED
রেজোলিউশন 1080 × 2340 পিক্সেল (FHD+)
স্ক্রিন - শরীরের অনুপাত ৮৫.৪%
টাচ স্ক্রিন হ্যাঁ, মাল্টি-টাচ
পিক্সেল ঘনত্ব ৩৯০ PPI
বেজেল-লেস ডিসপ্লে হ্যাঁ
রিফ্রেশ রেট 120Hz
স্ক্রিন প্রোটেকশন Corning Gorilla Glass Victus+
উজ্জ্বলতা ১০০০ nits (সর্বোচ্চ)
HDR 10 / HDR + সমর্থন HDR10+ সমর্থিত
ক্যামেরা সেটআপ ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা
প্রধান ক্যামেরার রেজোলিউশন 50MP (f/1.8)
ফ্ল্যাশ LED ফ্ল্যাশ
অটোফোকাস PDAF
ভিডিও FPS 4K@30fps, 1080p@30/60fps
OIS অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন (OIS)
ছবির রেজোলিউশন 8190 × 6120 পিক্সেল
জুম 10x ডিজিটাল জুম
ভিডিও রেকর্ডিং 4K UHD
শুটিং মোড প্রো, নাইট, পোর্ট্রেট, ম্যাক্রো, প্যানোরামা
ক্যামেরার বৈশিষ্ট্য AI ফটোগ্রাফি, নাইট মোড, সুপার স্টেডি
প্রধান ক্যামেরার অ্যাপারচার f/1.8
ফ্রন্ট ক্যামেরা সেটআপ একক সেলফি ক্যামেরা
ফ্রন্ট ক্যামেরার রেজোলিউশন 12MP
ফ্রন্ট ভিডিও রেকর্ডিং 1080p@30fps
ফ্রন্ট ক্যামেরার অ্যাপারচার f/2.2
ফ্রন্ট ভিডিও FPS 30fps
ওজন 195 গ্রাম
উচ্চতা 162.9 mm
রং Awesome Black, Awesome Lavender, Awesome White, Awesome Lime
প্রস্থ 78.2 mm
ওয়াটারপ্রুফ IP67 রেটিং
বেধ 7.4 mm
আইপি রেটিং IP67 (জল ও ধুলা প্রতিরোধী)
ধুলা প্রুফ হ্যাঁ (IP67)
ব্যাটারির ধরন Li-ion (অপসারণযোগ্য নয়)
দ্রুত চার্জিং 45W সুপার ফাস্ট চার্জিং
ক্ষমতা 5000mAh
ইউএসবি USB Type-C 2.0
স্থাপনা নন-রিমুভেবল
রিভার্স চার্জিং না
র‍যাম 6GB / 8GB / 12GB
অভ্যন্তরীণ স্টোরেজ 128GB / 256GB
ইউএসবি ওটিজি সমর্থিত
স্টোরেজ টাইপ UFS 2.2
RAM টাইপ LPDDR4X
নেটওয়ার্ক 5G 4G LTE 3G 2G
সাব-6GHz 5G সাপোর্ট
সিমের সাইজ Nano SIM + eSIM
সিম স্লট ডুয়াল SIM (Nano-SIM + eSIM)
VoLTE হ্যাঁ
EDGE হ্যাঁ
গতি 5G: সাব-6GHz
জিপিএস A-GPS, GLONASS, BDS, GALILEO
WLAN Wi-Fi 6 (802.11 a/b/g/n/ac/ax)
ইনফ্রারেড না
ব্লুটুথ 5.4, A2DP, LE
NFC হ্যাঁ
ইউএসবি USB Type-C 2.0, USB On-The-Go
ওয়াই-ফাই হটস্পট হ্যাঁ
GPRS হ্যাঁ
ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর হ্যাঁ
ফিঙ্গার সেন্সর টাইপ অপটিক্যাল
ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরের অবস্থান ডিসপ্লের নিচে (In-display)
ফেস আনলক হ্যাঁ
লাইট সেন্সর অ্যাম্বিয়েন্ট লাইট সেন্সর
লাউডস্পিকার স্টেরিও স্পিকার
অডিও জ্যাক না (USB-C)
ভিডিও MP4, H.264, H.265, VP8, VP9
তৈরিকৃত দেশ দক্ষিণ কোরিয়া
বৈশিষ্ট্য Samsung Knox Galaxy AI Circle to Search
Virtual Proximity 6 বছর আপডেট

Samsung Galaxy A36 - মূল্যায়ন

Samsung Galaxy A36 মধ্যম দামের সেগমেন্টে একটি শক্তিশালী 5G স্মার্টফোন যা চমৎকার ক্যামেরা, দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি এবং প্রিমিয়াম ডিসপ্লে অফার করে।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশে Realme C71 এর দাম (Price In BD)

সুবিধাসমূহ

  • উন্নত 50MP ট্রিপল ক্যামেরা সিস্টেম
  • 120Hz Super AMOLED ডিসপ্লে
  • 5000mAh ব্যাটারি + 45W দ্রুত চার্জিং
  • IP67 জল ও ধুলা প্রতিরোধী
  • 6 বছর সফটওয়্যার আপডেট গ্যারান্টি
  • Samsung Knox সিকিউরিটি
  • Galaxy AI ফিচার
  • 5G কানেক্টিভিটি

সীমাবদ্ধতা

  • 3.5mm হেডফোন জ্যাক নেই
  • ওয়্যারলেস চার্জিং সাপোর্ট নেই
  • UFS 2.2 স্টোরেজ (UFS 3.1 নয়)
  • ইনফ্রারেড ব্লাস্টার নেই
  • রিভার্স চার্জিং সাপোর্ট নেই

💡 ক্রেতার পরামর্শ

যারা মধ্যম বাজেটে একটি সম্পূর্ণ ফিচার সমৃদ্ধ 5G স্মার্টফোন খুঁজছেন, Samsung Galaxy A36 তাদের জন্য একটি চমৎকার পছন্দ। বিশেষত ক্যামেরা প্রেমী এবং দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারকারীদের জন্য আদর্শ।

Samsung Galaxy A36: ডিজাইন এবং ডিসপ্লে

Samsung Galaxy A36 এর ডিজাইন নিয়ে আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই বলা যায় যে, এটি একটি আধুনিক এবং স্টাইলিশ ডিভাইস। ফোনটির সামনের দিকে একটি বড় আকারের ডিসপ্লে রয়েছে যা প্রায় পুরো ফ্রন্ট প্যানেল জুড়ে বিস্তৃত। ডিসপ্লের উপরের বাম কোণায় একটি ছোট পাঞ্চ-হোল ক্যামেরা রয়েছে যা ডিজাইনকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।

ফোনটির পেছনের প্যানেলে একটি ট্রিপল ক্যামেরা সেটআপ রয়েছে যা উল্লম্বভাবে সাজানো। ক্যামেরা মডিউলটি সামান্য বাইরের দিকে উঁচু হয়ে আছে যা ফোনকে একটি অনন্য রূপ দিয়েছে। পেছনের প্যানেলে একটি ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরও রয়েছে যা দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে কাজ করে।

Samsung Galaxy A36 এর ডিসপ্লে সম্পর্কে বলতে গেলে, এতে রয়েছে 6.6 ইঞ্চির একটি সুপার AMOLED ডিসপ্লে যার রেজোলিউশন 1080 x 2408 পিক্সেল। ডিসপ্লেটির রিফ্রেশ রেট 120Hz যা স্ক্রলিং এবং গেমিং এর অভিজ্ঞতাকে আরও মসৃণ করে তোলে। এছাড়াও ডিসপ্লেটি HDR10+ সাপোর্ট করে যা ভিডিও এবং ছবি দেখার অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করে।

ডিসপ্লের ব্রাইটনেস লেভেল যথেষ্ট ভালো হওয়ায় সরাসরি সূর্যের আলোতেও স্ক্রিনের কন্টেন্ট স্পষ্টভাবে দেখা যায়। ডিসপ্লের কালার রিপ্রোডাকশনও অসাধারণ যা ছবি এবং ভিডিওকে আরও জীবন্ত করে তোলে।

ক্যামেরা ফিচার

Samsung Galaxy A36 এর ক্যামেরা সেটআপ নিঃসন্দেহে এর অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। ফোনটির পেছনে রয়েছে তিনটি ক্যামেরা:

প্রাইমারি ক্যামেরা: 50 মেগাপিক্সেল, f/1.8 অ্যাপারচার

আল্ট্রা-ওয়াইড ক্যামেরা: 8 মেগাপিক্সেল, f/2.2 অ্যাপারচার

ম্যাক্রো ক্যামেরা: 2 মেগাপিক্সেল, f/2.4 অ্যাপারচার

প্রাইমারি ক্যামেরাটি দিনের বেলায় অসাধারণ ছবি তুলতে সক্ষম। রঙের সঠিকতা, ডিটেইল এবং ডায়নামিক রেঞ্জ সবই প্রশংসনীয়। কম আলোতেও ক্যামেরাটি ভালো পারফর্ম করে যা নাইট মোড এর মাধ্যমে আরও উন্নত করা হয়েছে।

আল্ট্রা-ওয়াইড ক্যামেরাটি ল্যান্ডস্কেপ বা বড় গ্রুপের ছবি তুলতে সাহায্য করে। 123 ডিগ্রির ফিল্ড অফ ভিউ সহ এই ক্যামেরাটি প্রশস্ত দৃশ্য ধারণ করতে পারে। যদিও কম আলোতে এর পারফরম্যান্স সামান্য কমে যায়, তবুও দিনের বেলায় এটি ভালো ছবি তুলতে সক্ষম।

ম্যাক্রো ক্যামেরাটি খুব কাছাকাছি থেকে ছবি তুলতে ব্যবহৃত হয়। যদিও এর রেজোলিউশন কম, তবুও ভালো লাইটিং কন্ডিশনে এটি বিস্তারিত ম্যাক্রো ছবি তুলতে পারে।

সেলফি ক্যামেরা হিসেবে Samsung Galaxy A36 এ রয়েছে 32 মেগাপিক্সেলের একটি ফ্রন্ট ক্যামেরা যার অ্যাপারচার f/2.2। এই ক্যামেরাটি সেলফি এবং ভিডিও কলিং এর জন্য আদর্শ। পোর্ট্রেট মোডে ব্যাকগ্রাউন্ড বোকেহ ইফেক্টও বেশ ভালো কাজ করে।

ভিডিও রেকর্ডিং এর ক্ষেত্রে Samsung Galaxy A36 4K রেজোলিউশনে 30fps এ ভিডিও রেকর্ড করতে পারে। এছাড়াও 1080p রেজোলিউশনে 60fps এ ভিডিও রেকর্ডিং সম্ভব। ভিডিও স্ট্যাবিলাইজেশনও যথেষ্ট ভালো যা হাঁটার সময় ভিডিও ধারণ করতে সাহায্য করে।

পারফরম্যান্স এবং হার্ডওয়্যার

Samsung Galaxy A36 এর পারফরম্যান্স নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ফোনটিতে রয়েছে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন 680 প্রসেসর যা একটি মিড-রেঞ্জ চিপসেট হিসেবে বেশ ভালো পারফরম্যান্স প্রদান করে। এই প্রসেসরটি 6nm প্রসেসে তৈরি যা পাওয়ার এফিশিয়েন্সি বৃদ্ধি করেছে।

প্রসেসরের সাথে রয়েছে 6GB বা 8GB র্যাম (ভ্যারিয়েন্ট অনুযায়ী) যা মাল্টিটাস্কিং এবং গেমিং এর জন্য যথেষ্ট। ডিভাইসটি অ্যান্ড্রয়েড 13 অপারেটিং সিস্টেমের সাথে One UI 5.1 ইন্টারফেসে চলে। One UI স্যামসাংয়ের নিজস্ব কাস্টমাইজড ইন্টারফেস যা অ্যান্ড্রয়েডকে আরও ব্যবহারবান্ধব করে তোলে।

স্টোরেজের ক্ষেত্রে Samsung Galaxy A36 তে রয়েছে 128GB বা 256GB ইন্টারনাল স্টোরেজ (ভ্যারিয়েন্ট অনুযায়ী)। এছাড়াও এতে একটি মাইক্রোএসডি কার্ড স্লট রয়েছে যার মাধ্যমে স্টোরেজ 1TB পর্যন্ত বাড়ানো যায়।

গেমিং পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে Samsung Galaxy A36 মিড-রেঞ্জ গেমস যেমন পাবজি মোবাইল, কল অফ ডিউটি মোবাইল ইত্যাদি মাঝারি সেটিংসে ভালোভাবে চালাতে পারে। হেভি গেমস লো সেটিংসে চললেও কিছুটা ফ্রেম ড্রপ হতে পারে।

ডেইলি টাস্কস যেমন সোশ্যাল মিডিয়া ব্রাউজিং, ওয়েব ব্রাউজিং, ইমেল চেকিং, ভিডিও স্ট্রিমিং ইত্যাদি করার জন্য ফোনটি অত্যন্ত দ্রুত এবং স্মুথ। অ্যাপ লোডিং টাইমও খুব কম যা ইউজার এক্সপেরিয়েন্সকে আরও উন্নত করে।

ব্যাটারি এবং চার্জিং

Samsung Galaxy A36 এ রয়েছে 5000mAh এর একটি বড় ব্যাটারি যা হেভি ইউজারদের জন্যও পুরো দিন চলার নিশ্চয়তা দেয়। মডারেট ইউজে ব্যাটারিটি সহজেই ১.৫ দিন চলতে পারে।

চার্জিং এর ক্ষেত্রে ফোনটি 25W ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে। বক্সের সাথে একটি 25W চার্জারও দেওয়া হয় যার মাধ্যমে ফোনটি ৩০ মিনিটে ০% থেকে ৫০% চার্জ হয়ে যায়। পুরো ব্যাটারি চার্জ হতে প্রায় ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট সময় লাগে।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশে Honor 400 (512GB) এর দাম price In BD

ব্যাটারি লাইফ সংরক্ষণের জন্য ফোনটিতে রয়েছে পাওয়ার সেভিং মোড যা ব্যাটারির চার্জ কম থাকলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিছু ফিচার লিমিট করে ব্যাটারি বাঁচায়। এছাড়াও অ্যাডাপ্টিভ পাওয়ার সেভিং মোড রয়েছে যা ইউজারের ব্যবহারের প্যাটার্ন অনুযায়ী ব্যাটারি ব্যবহার অপ্টিমাইজ করে।

ব্যাটারি হেলথ ফিচারও রয়েছে যা ব্যাটারির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে এবং ব্যাটারির আয়ু বাড়ানোর জন্য কিছু টিপস দেয়।

সফটওয়্যার এবং ইউজার এক্সপেরিয়েন্স

Samsung Galaxy A36 অ্যান্ড্রয়েড 13 অপারেটিং সিস্টেমের সাথে One UI 5.1 ইন্টারফেসে চলে। One UI স্যামসাংয়ের নিজস্ব কাস্টমাইজড ইন্টারফেস যা অ্যান্ড্রয়েডকে আরও ব্যবহারবান্ধব করে তোলে। ইন্টারফেসটি খুব সাধারণ এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য যা নতুন ইউজারদের জন্যও আদর্শ।

One UI 5.1 এ রয়েছে অনেক নতুন ফিচার এবং কাস্টমাইজেশন অপশন। হোম স্ক্রিন, লক স্ক্রিন, আইকন, ফন্ট, কালার স্কিম ইত্যাদি নিজের পছন্দমতো কাস্টমাইজ করা যায়। এছাড়াও ডার্ক মোড রয়েছে যা চোখের চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং ব্যাটারি বাঁচায়।

স্যামসাং নিজেদের অনেক অ্যাপ প্রি-ইনস্টলড দেয় যেমন স্যামসাং ইন্টারনেট ব্রাউজার, স্যামসাং মেসেজ, স্যামসাং নোটস, স্যামসাং হেলথ, স্যামসাং মেম্বার্স ইত্যাদি। এছাড়াও গুগলের অ্যাপস যেমন গুগল প্লে স্টোর, গুগল ম্যাপস, গুগল ক্রোম, ইউটিউব, জিমেইল ইত্যাদিও প্রি-ইনস্টলড থাকে।

সিকিউরিটির ক্ষেত্রে Samsung Galaxy A36 তে রয়েছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর, ফেস আনলক, নকিয়া নকিয়া আনলক, পিন, প্যাটার্ন এবং পাসওয়ার্ড। ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরটি খুব দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে কাজ করে। ফেস আনলকও যথেষ্ট ভালো কাজ করে যদিও কম আলোতে এটি কিছুটা সমস্যা করতে পারে।

স্যামসাং সিকিউরিটি অ্যাপের মাধ্যমে ডিভাইসের সিকিউরিটি চেক করা যায় এবং কোনো থ্রেট থাকলে তা সরিয়ে ফেলা যায়। এছাড়াও ফাইন্ড মাই মোবাইল ফিচার রয়েছে যা ফোন হারিয়ে গেলে তা খুঁজে বের করতে সাহায্য করে।

কানেক্টিভিটি এবং অন্যান্য ফিচার

Samsung Galaxy A36 এ রয়েছে সব ধরনের কানেক্টিভিটি অপশন। এতে রয়েছে ডুয়াল ন্যানো সিম স্লট, 4G VoLTE, ওয়াই-ফাই 802.11 a/b/g/n/ac, ব্লুটুথ 5.2, GPS, GLONASS, GALILEO, BDS এবং USB টাইপ-সি পোর্ট।

অডিওর ক্ষেত্রে ফোনটিতে রয়েছে একটি 3.5mm হেডফোন জ্যাক যা আজকাল অনেক ফোনে থাকে না। এছাড়াও ফোনটিতে রয়েছে ডলবি অ্যাটমস সাপোর্টেড স্টেরিও স্পিকার যা অডিও এক্সপেরিয়েন্সকে আরও উন্নত করে।

অন্যান্য ফিচারের মধ্যে রয়েছে অ্যাকসিলোমিটার, জাইরোস্কোপ, প্রক্সিমিটি সেন্সর, কম্পাস, অ্যাম্বিয়েন্ট লাইট সেন্সর ইত্যাদি। এছাড়াও ফোনটিতে রয়েছে ওয়াটার এবং ডাস্ট রেজিস্ট্যান্স যা IP67 রেটিং সহ। এর মানে হলো ফোনটি ১ মিটার গভীর পানিতে ৩০ মিনিট পর্যন্ত নিরাপদে থাকতে পারে।

পূর্ববর্তী মডেলের সাথে তুলনা

Samsung Galaxy A36 এর পূর্ববর্তী মডেল Samsung Galaxy A35 এর সাথে তুলনা করলে কিছু উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। প্রথমত, ডিসপ্লের রিফ্রেশ রেট A35 এ 90Hz থাকলেও A36 তে 120Hz যা স্ক্রলিং এবং গেমিং এর অভিজ্ঞতাকে আরও মসৃণ করে তুলেছে।

ক্যামেরার ক্ষেত্রেও কিছু উন্নতি এসেছে। A35 এর প্রাইমারি ক্যামেরা ছিল 48 মেগাপিক্সেল যেখানে A36 তে 50 মেগাপিক্সেল। সেলফি ক্যামেরাও A35 এ 13 মেগাপিক্সেল থাকলেও A36 তে 32 মেগাপিক্সেল করা হয়েছে।

প্রসেসরের ক্ষেত্রে A35 এ স্ন্যাপড্রাগন 680 প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছিল যা A36 তেও একই রয়েছে, তবে অপটিমাইজেশনের কারণে A36 এর পারফরম্যান্স কিছুটা ভালো।

ব্যাটারি ক্ষমতা উভয় ফোনেই 5000mAh একই রয়েছে, তবে A36 এর ব্যাটারি লাইফ কিছুটা ভালো কারণ এতে আরও ভালো অপটিমাইজেশন করা হয়েছে।

ডিজাইনের ক্ষেত্রে A36 এর ডিজাইন A35 এর তুলনায় আরও আধুনিক এবং স্টাইলিশ। বিশেষ করে ক্যামেরা মডিউলের ডিজাইন এবং কালার অপশনগুলো A36 তে আরও আকর্ষণীয় করা হয়েছে।

বাংলাদেশে Samsung Galaxy A36 এর দাম

বাংলাদেশের বাজারে Samsung Galaxy A36 এর দাম ভ্যারিয়েন্ট অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত দুটি ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়:

6GB RAM + 128GB স্টোরেজ: ৩৪,৯৯০ টাকা

8GB RAM + 256GB স্টোরেজ: ৩৯,৯৯০ টাকা

এই দামগুলো অফিসিয়াল প্রাইস হতে পারে যা বিভিন্ন অফার বা ডিসকাউন্টের কারণে পরিবর্তিত হতে পারে। বিভিন্ন ই-কমার্স সাইট বা রিটেইল স্টোরে বিশেষ অফারের মাধ্যমে এই দাম আরও কম হতে পারে।

বাংলাদেশের বাজারে Samsung Galaxy A36 এর প্রতিযোগী হিসেবে কিছু ফোন রয়েছে যেমন Xiaomi Redmi Note 12 Pro, Realme 10 Pro+, Poco X5 Pro ইত্যাদি। এই ফোনগুলোর সাথে তুলনা করলে Samsung Galaxy A36 এর দাম কিছুটা বেশি হলেও স্যামসাংয়ের ব্র্যান্ড ভ্যালু, আফটার সেলস সার্ভিস এবং সফটওয়্যার আপডেটের কারণে এটি একটি ভালো অপশন হতে পারে।

কোথায় কিনবেন

বাংলাদেশে Samsung Galaxy A36 কেনার জন্য বিভিন্ন অফিসিয়াল এবং অনানুষ্ঠানিক চ্যানেল রয়েছে:

অফিসিয়াল স্যামসাং স্টোর: দেশের বিভিন্ন শহরে স্যামসাংয়ের নিজস্ব স্টোর রয়েছে যেখান থেকে Samsung Galaxy A36 কেনা যায়। এই স্টোরগুলোতে অফিসিয়াল ওয়ারেন্টি এবং বিভিন্ন অফার পাওয়া যায়।

অথরাইজড রিটেইলার: স্যামসাংয়ের অথরাইজড রিটেইলারদের কাছ থেকেও Samsung Galaxy A36 কেনা যায়। এই রিটেইলারদের কাছ থেকেও অফিসিয়াল ওয়ারেন্টি পাওয়া যায়।

ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম: দারাজ, প্রিয়শপিং, বাজারমার্ট ইত্যাদি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম থেকেও Samsung Galaxy A36 কেনা যায়। এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে বিভিন্ন অফার এবং ডিসকাউন্ট পাওয়া যেতে পারে।

অনলাইন মার্কেটপ্লেস: ফেসবুক মার্কেটপ্লেস, ইবে, অ্যামাজন ইত্যাদি অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকেও Samsung Galaxy A36 কেনা যেতে পারে। তবে এই প্ল্যাটফর্মগুলো থেকে কেনার সময় ওয়ারেন্টি এবং পণ্যের অরিজিনালিটি যাচাই করে নেওয়া উচিত।

কেনার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখা উচিত:

অফিসিয়াল ওয়ারেন্টি আছে কিনা

পণ্যটি অরিজিনাল কিনা

বক্সের সাথে সব অ্যাক্সেসরিজ আছে কিনা

পণ্যের দাম বাজারের সাথে মেলে কিনা

সুবিধা এবং অসুবিধা

সুবিধা:

আধুনিক এবং স্টাইলিশ ডিজাইন

120Hz রিফ্রেশ রেট সহ সুপার AMOLED ডিসপ্লে

ভালো কোয়ালিটির ক্যামেরা সেটআপ

বড় ব্যাটারি এবং ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট

ভালো পারফরম্যান্স প্রদানকারী প্রসেসর

অ্যান্ড্রয়েড 13 এবং One UI 5.1 সাপোর্ট

IP67 ওয়াটার এবং ডাস্ট রেজিস্ট্যান্স

3.5mm হেডফোন জ্যাক

মাইক্রোএসডি কার্ড সাপোর্ট

অফিসিয়াল সফটওয়্যার আপডেট

অসুবিধা:

প্রাইস কিছুটা বেশি হতে পারে

হেভি গেমিং এ কিছুটা সমস্যা হতে পারে

ওয়্যারলেস চার্জিং সাপোর্ট নেই

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশে Walton ZENX 2 এর দাম price In BD

ক্যামেরার নাইট মোড আরও ভালো হতে পারতো

আল্ট্রা-ওয়াইড ক্যামেরার কোয়ালিটি আরও ভালো হতে পারতো

উপসংহার

Samsung Galaxy A36 বাংলাদেশের বাজারে একটি ভালো মিড-রেঞ্জ স্মার্টফোন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এর আধুনিক ডিজাইন, ভালো কোয়ালিটির ডিসপ্লে, দক্ষ ক্যামেরা এবং শক্তিশালী ব্যাটারি এটিকে এই দামের মধ্যে একটি আদর্শ পছন্দ করে তুলেছে।

যারা একটি ভালো ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন খুঁজছেন যা দৈনন্দিন কাজে দক্ষভাবে ব্যবহার করা যায়, ভালো ছবি তুলতে পারে, এবং ব্যাটারি ব্যাকআপ ভালো, তাদের জন্য Samsung Galaxy A36 একটি ভালো অপশন হতে পারে।

যদিও এর দাম কিছুটা বেশি, তবুও স্যামসাংয়ের ব্র্যান্ড ভ্যালু, আফটার সেলস সার্ভিস এবং সফটওয়্যার আপডেটের কারণে এটি একটি নির্ভরযোগ্য পছন্দ হতে পারে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, Samsung Galaxy A36 বাংলাদেশের বাজারে একটি ভালো মিড-রেঞ্জ স্মার্টফোন যা ব্যবহারকারীদের অনেক প্রত্যাশা পূরণ করতে সক্ষম। যারা একটি ভালো মানের স্মার্টফোন কিনতে চান তাদের জন্য Samsung Galaxy A36 অবশ্যই বিবেচনা করা উচিত।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ইভিনিং বিডিতে কমেন্ট করুন

comment url